মিয়ানমারে সংঘাতময় পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ থেকে আশঙ্কাজনক হারে পাচার হচ্ছে জ্বালানি তেলসহ প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য। তবে সীমান্ত দিয়ে নয়, মিয়ানমারে তেল পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে সমুদ্র উপকূলকে ব্যবহার করছে চোরাকারবারিরা। সীমান্তে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) কঠোর নজরদারি রয়েছে; তারপরও মিয়ানমারে তেল ও খাদ্যপণ্য পাচার ঠেকানো যাচ্ছে না। তবে কীভাবে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে মিয়ানমারে এতো তেল ও খাদ্যপণ্য পাচার হচ্ছে তা নিয়ে জনমনে নানা শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, মিয়ানমারে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মি সঙ্গে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি ও সেনাবাহিনীর চলছে তুমুল লড়াই। যার রেশ পড়েছে বান্দরবানের ঘুমধুম, তুমব্রু এবং কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ সীমান্তে। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিজিবি ও পাচার পয়েন্টগুলোও রয়েছে র্যাবের নিয়ন্ত্রণে।
এ ছাড়া মিয়ানমারের সংঘাতময় পরিস্থিতিতে সেখানে জ্বালানি তেলসহ খাদ্যপণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। তাই পাচারকারীরা নতুন কৌশল অবলম্বন করছেন। সীমান্তে বিজিবির কঠোর অবস্থানের কারণে চোরাকারবারিরা এখন সমুদ্র উপকূলকে পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে বেছে নিয়েছে। এ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে উপকূলের ট্রলার ও জেলেদের।
স্থানীয়রা জানান, স্থানীয় ও ওইপাড়ের কিছু লোক তেল ও খাদ্যপণ্য পাচারের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। প্রশাসন থেকে এটা দ্রুত রোধ করা দরকার। এভাবে দেশের সম্পদ অন্য দেশে চলে গেলে ক্ষতির মুখে পড়ব আমরা।
কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে রয়েছে অসংখ্য পয়েন্ট। তার মধ্যে পাচারের নিরাপদ স্থান হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে উখিয়ার রেজুখাল, ইনানি, হিমছড়ি ও নাজিরারটেক পয়েন্ট। আর টেকনাফে ব্যবহার হচ্ছে শামলাপুর, বাহারছড়া ও শাহপরীর দ্বীপ পয়েন্ট। দেশের মূল্যবান জ্বালানি তেল পাচার রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি স্থানীয়দের।
এ বিষয়ে কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, পাচারে জড়িতদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এখনি আমরা নামগুলো জানাচ্ছি না। একই সঙ্গে সমুদ্র উপকূলের পয়েন্টগুলো চিহ্নিত করার পাশাপাশি চোরাকারবারিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।
গত দেড়মাসে মিয়ানমারে পাচারকালে ১০ হাজার লিটার জ্বালানি তেল, ৩ হাজার লিটার সয়াবিন তেল, ৫০০ কেজি ময়দা, ওষুধ, পেঁয়াজ, রসুন ও আদাসহ ৩৫ পাচারকারীকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী।
সুত্র; সময় টিভি
পাঠকের মতামত